বাগেরহাটে পানি বন্দি অর্ধশতাধিক পরিবারঃ নেই ঈদের আমেজ
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
সম্প্রতিক ঘুর্নিঝড় আম্পানের আঘাতে বেড়িবাধ ভেঙ্গে লবণ পানি দ্বারা প্লাবিত হয়ে পানি বন্দি অবস্থায় আছে বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া নামক এলাকার অন্তত ৫০টি পরিবার।
গত ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে দড়াটানা নদী সংলগ্ন বৈটপুর ভদ্রপাড়া এলকার পাশ দিয়ে যাওয়া গ্রাম রক্ষা বাধ (ওয়াবদা) এর বেড়ি বেধিবাধ ভেঙ্গে যায়। সারেজমিনে দেখা যায়, ভদ্রপাড়া খেয়া এর ডান দিকে ভদ্রপাড়া বড় মসজিদ এর পাশেই এই ভাঙ্গন ঘটে। যার ফলে ওই দিন রাত থেকেই জোয়ারের পানি বাধাহীন ভাবে লোকালয়ে ডুকে পড়ে।একে একে ডুবতে থাকে স্থানীয়দের পুকুর,উঠান সহ অাশপাশের সব কিছু। একপর্যায়ে পানি প্রায় ঘরের মেঝেতে উঠে যায়।
চন্দ্রহিসাবে আমাবস্যা ও জোয়ার ভাটার "জোঘা"চলাকালীন সময়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটার ফলে পানির চাপ আরো বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়,ঘুর্নিঝড়ের ফলে বাধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে ডুকে পড়ে। জোয়ার ভাটার টান বিবেচনা করে জোঘা -ভাটিকা নামে দুটো গোন বা সময় ভাগ করা হযেছে।আমাবস্যায় জোঘা হয়।এসময় পানি চাপ বেড়ে যায় এবং ঠিক এর আগে ঘুর্নিঝড় আম্পান আঘাত হানে। যার ফলে নদীর পানিতে আরো চাপ পড়ে ফলে বাধভেঙ্গে লোকালয়ে ডুকে পড়া পানি নদীতে নামে না বরং বেড়ে যায়।ভাটিতে যদিও কিছুটা পানি নামে জোয়ারে আবার ডুকে যায়।
স্থানীয়রা আরো জানায়, ঝড়ের পর থেকে পানি বাড়তে থাকে এবং এটা অনেকের মেঝে পর্যন্ত উঠে আসে। গত কয়েকদিন ধরে তারা বাইরেও যেতে পারছে না।পিচের রাস্তায় জোয়ারের সময় হাটু পর্যন্ত পানি।অনেকের মাছের পুকু্র সহ অনেক ক্ষেত খামার নষ্ট হয়েছে। গত ৫ দিন ধরে পানি বন্দি থাকার পর আজ ঈদ। পানি বন্দি অবস্থায় পড়েনি তাদের ওপর ঈদের কোন প্রভাব।
বয়স্কদের থেকে বেশি চিন্তিত শিশু কিশোর-বৃদ্ধরা।স্থানীয় কিশোরদের সাথে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বললে তারা জানায় "ঈদ মানে আনন্দ।মানে খুশি।সবাই এক সাথে অনেক মজা করবো বাইরে ঘুরবো কিন্তু এবছর সেটা হবে না করোনার কারনে বাইরে তো বেশি যেতেই পারছি না, তারপর আবার আম্পানের পানি আমাদের ঘরের খাটের ওপর এমনভাবে বন্দি করেছে মনে হচ্ছে খাচার ভেতর আছি। আমরা বাইরে যেতে চাই।পানি না থাকলে অন্তত উঠানে যেতে পারতাম তাও বন্ধ।শুধু ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে।
স্থানীয় মহিলারা বলেন,অনেক নিচু ঘরে পানি উঠে গেছে যার ফলে গৃহপালিত পশু নিয়ে আমরা দ্বিধায় আছি গত কযেকদিন অনেক পশু ঘরে রাখতে হচ্ছে।এদিকে কতৃপক্ষ কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছে না। করোনার ভেতর আম্পানের এমন আঘাত তারপর পানি বন্দি জীবন যেন মড়ার ওপর খাড়ার ঘা।তারপর আবার দেয়া হয়নি কোন খাদ্যসহায়তা।
তারা আরো জানায়,করোনা ও আম্পানের এমন আঘাতে আমাদের কোন ঈদ নেই,ওদিকে বাচ্চাদের নিয়ে আছি আরেক মছিবতে। আমাদের স্থানীয় চেয়্যারমান ঘুর্নিঝড়ের পর পরিদর্শন করে খোজ নিয়েছে এবং কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত বেড়িবাধ পুনঃ নির্মান ও পানি নিকাষ্শনের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়্যারমান এর সাথে কথা বললে তিনি জানায়,কতৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে, তারা দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করবেন। এই ঈদে হয়তো তাদের জনবল একটু কম আছে তাই হয়তো কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।
কোন মন্তব্য নেই